Friday, April 3, 2015

হ্যাকিং এবং হ্যাকার (পর্ব- ১)





হ্যাকিং  শব্দটা বোধহয় এই পৃথিবীর অন্য কোন দেশ থেকে বাংলাদেশে বেশি আলোচিত!  তা কতটা সেটা হ্যাকিং এর সাথে যারা জড়িত তারা বুঝতে পারেন। যারা সারাদিন হ্যাকিং শিখব হ্যাকিং শিখব বলে রীতিমত মুখে ফেনা তুলে, তারা লজ্জা কি জিনিষ তা ভুলে হ্যাকিং শিখার নেশায় অন্যের গোলাম বনে যায়, রিপোর্টিং করেঅন্যকে, অন্যের সম্পর্কে কিছুই না জেনে গালমন্দ করে আর আশায় থাকে ! অনেক জঘন্য কাজ করতেও কারো আপত্তি নাই তারা শুধু একটি জিনিষই দিবা স্বপ্ন দেখে - কেউ এসে তাকে হ্যাকিং শিখিয়ে যাবে। তাদের জন্য করুণা ছাড়া আর কিছুই নেই।  কারন বাস্তবতা এটা না! এটা কোন ছেলেখেলা না, সিলেবাসের কোন অংশ না, কোন লিমিট নেই এটার। এটা হলো ক্রিয়েটিভি। যার যত মেধা সে তত ভাল হ্যাকার হতে পারে। কিন্তু পরীক্ষায় ফেল করা, ডিম পাওয়া স্টুডেন্ট যারা মুখস্থ বা কপি করে পাশ করে তারা হতে পারে না। এখানে মেধার ব্যাপারটা মাথায় রাখা উচিত।  এমন না যে, কুদ্দুস সাহেব যিনি রিকশা চালান তার হঠাৎ ইচ্ছা হলো উনি হ্যাকিং শিখবেন। আর এর উর ইনবক্সে মেসেজ দিলো আর শিখিয়ে দিল। বর্তমানে মনে হয় এরকম ঘটনা ঘটে।  কোন লেভেল নাই, কোন সীমাবদ্ধতা নাই। যার ইচ্ছা হয় সেই একটা একটা ফেসবুক আইডি খুলেই হ্যাকার হয়ে যেতে চান।





 ঠিক আগে যেমন বাংলা ছবির নায়কের টিশুম টিশুম ঘুষি দিতে দেখে অনেকেই সিনেমার নায়ক হতে চাইতেন। কিন্তু তা সম্ভব হয়না । কিন্তু এখন একটা ফেসবুক আইডি থাকলেই হয়। 

বাস্তবতা ভিন্ন।   এটা সাধনার ব্যাপার। এটা একটা জগৎ । এখানে কিছু করতে গেলে তার আগে প্লাটফর্মে  দাড়াতে হবে। বেসিক জ্ঞান নিতে হবে। প্রোগ্রামিং শিখতে হবে। অনেস্টলি বলছি, যারা কম্পিউটারে পড়াশোনা করেন তাদের অধিকাংশই প্রোগ্রামিং সি তে কাঁচা বা পারেন না। কোন মতে পাশ করেন। বেশিরভাগ ফেইল ও করেন। এটা আমার অভিজ্ঞতা। প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ যেখানে একজন কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র বুঝতে দিনের পর দিন পার করে, কোন রকমে পাশ করে সেখানে একেবারে নতুন আসা ব্যক্তিরা কিভাবে কোন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ বা অন্য কোন এপ্লিকেশন শিখবে সেটা ভাবার বিষয়। এটা তাদের কাছে স্রেফ মঙ্গল গ্রহের ভাষা বলে মনে হবে। হ্যাকিং এর চিন্তা তো তখন চীনের দূরত্বে! প্লিজ আগে হ্যাকিং জিনিষটা কি সেটা জানার চেষ্টা করেন।  এর জন্য কি কি শিখতে হবে, সে সব বিষয় গুলো আপনি অদৌ শিখতে পারবেন কিনা? এ জিনিষ গুলো একটু মাথায় রেখে তারপর হ্যাকিং শিখবেন কিনা সেটা ভাবা  উচিত।




তো, যারা হ্যাকিং শিখবেন করে  করে  মুখে ফেনা তুলে যাচ্ছেন, এর ওর প্রোফাইলে গিয়ে নক দিচ্ছেন ভাই প্লিজ হ্যাকিং শিখান! তাদের প্রতি আমার একটা প্রশ্ন- হ্যাকিং শিখে কি করবেন? আপনার আল্টিমেট গোল কিএটা শিখে আপনি কি করতে চান? আপনার কোন উপকার হবে? লাভবান হবেন নাকি সময় নষ্ট করবেন? হ্যাকিং করে আপনি কি আর্ন করতে পারবেন? সেটা কি আপনার কোন কাজে আসবে ভবিষ্যতে? যদি নাই আসে তাহলে স্ট্রিক্টলী বলব, এই চর্চার চিন্তা বাদ দিন।  শুধু শুধু সময় নষ্ট করবেন না। মনে রাখবেন জীবনে সময়ের মূল্য অনেক বেশি। যা করে আপনার কোন কাজে আসবেনা তা করতে যাবেন না। আর যদি মনে করেন হ্যাকিং শিখে কারো ক্রেডিট কার্ড মেরে দিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা কামাবেন,   ধান্ধা করবেন হ্যাকিং এর নাম করে। তাহলে ওয়েলকাম !  সেক্ষেত্রে লাল দালানের কথাটাও মাথায় রাখা উচিত।


আর যদি আপনার উত্তর হয় এরকম-  না ভাই আমি হ্যাকিং শিখে দেশের উপকার করব! তাদের বলব দেশের উপকার করার জন্য অনেকেই আছে। দেশে হাজার হাজার আইটি স্পেশালিষ্ট আছে। দেশের সেবা করার জন্য অনেকেই রাত দিন খেটে, খেয়ে  না খেয়ে কাজ করার যোগ্য মানুষ আছে। আগে নিজে কি কারনে এই জগতে পা বাড়াতে চান সেটা নিজের কাছে ক্লিয়ার হয়ে নিন।  আর দুয়েকটা সাইট ডিফেস দিলেই সেটা েশের কোন উপকারে আসে না।  আগে চিন্তা করুন হ্যাকিংটা আসলেই আপনার জীবনে কোন ফল বয়ে আনবে কিনানা আনলে বাদ দিতে পারেন। আর বাদ না দিলে যা হবে-



  • কেউ আপনাকে নিয়ে ছেলে খেলা করবে।
  • মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আপনাকে দিয়ে তাদের ব্যক্তিগত সার্থ উদ্ধার করবে।
  • কারো টাইম লাইনে হ্যাকার পরিচয় দেখে তাকে মেসেজ দিয়ে বিরক্ত করবেন। 
  • উত্তর না পেলে গালি দিয়ে চলে যাবেন।
  • ভাগ্যক্রমে কোন দিন কোন রকমে এসকিউএল এর কিছু সিনট্যাক্স মুখস্থ করবেন।
  • একটা সাইট ইঞ্জেক্ট করবেন (! ধরে নিলাম)
  • একটা সাইট ডিফেস দি্বেন ! (ধরে নিলাম)



শুরু হবে ভাব নেওয়া, ভাবতে শুরু করে দেবেন আমি সব শিখে গেছি, আমি এখন বিশাল হ্যাকার। নামের পাশে হ্যাকার লাগাই রাখবেন।  খুব অহংকার চলে আসবে মনে । কোন রেস্পেক্টেড ব্যাক্তিকেও তখন সম্মান দিতে পারবেন না। কারন তখন আপনি নিজেকে অন্য গ্রহের প্রানী ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন।


আর অন্যদের প্রতিক্রিয়াঃ অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী , অল্প পানির মাছ লাফাই বেশি । ল্যামার পরিচিতি । এধরনের মানুষ গুলোকে কেউ গোনায়ই ধরবেনা। সো প্লিজ! শুধু হ্যাকিং হ্যাকিং করে নিজের মাথা নিজে নষ্ট করবেন না, অন্যদের ও না!


 
হ্যাঁ, আপনার ভবিষ্যৎ কোন পরিকল্পনা বা আপনি যদি আইটি বিষয়ে পড়াশোনা করেন, ভালো প্রোগ্রামার হওয়ার স্বপ্ন থাকে, কোন সিকিউরিটি স্পেশালিষ্ট হতে চান আর এর মধ্যেই আপনার ক্যারিয়ার বিল্ডআপ করতে চান তাহলে আপনি হ্যাকিং কে আপনি নিতে পারেন।  কারন আপনার ক্যারিয়ারে এই নলেজ গুলো কাজে আসবে। সব না, কিছু কিছু। যদি আপনি ভিবি ডট নেট এর কাজ করেন, তাহলে হ্যাকিং আপনার খুব বেশি কাজে আসবেনা। যদি ওয়েব বেইসড এপ্লিকেশনে কাজ করেন, তাহলে এর মধ্যে কিছু জিনিষ কাজে আসবে।    আপনি যদি আইটি লাইনে পড়াশোনা করেন, ক্যারিয়ার করেন তাহলে হ্যাকিং শিখার আগে মিনিমাম রিকোয়ারমেন্টস গুলো আপনার রপ্ত করতে হবে। হ্যাকিং শিখতে পারেন আর না পারেন, কিছু নতুন জিনিষ জ্ঞান ভান্ডারে যোগ হলে মন্দ না। এর জন্য অন্যকে নক না করেও অনেক কিছু শিখতে পারেন যদি গুগলকে ব্যাবহার করতে জানেন।


দুঃখের সাথে বলতে হয় যারা হ্যাকিং শিখতে আসে তাদের বেশির ভাগ মানুষই গুগল কি সেটাই জানেনা।  অল্প বিদ্যা নিয়ে কখনই বাহাদুরী করবেন না। মনে রাখবেন চার দেয়ালের মাঝে বন্দি আপনি। আর বিশাল দুনিয়া পড়ে আছে যা আপনার কল্পনাতেও নেই কি হচ্ছে সেখানে, কেমন ফাস্ট অন্যরা। বিনয়ী হতে শিখুন।


বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যা হচ্ছে সেটা খুব দুঃখজনক। লক্ষ্য করলে দেখবেন বয়সে ছোট, ক্লাস ৬, ১০ এ পড়ুয়াদের মধ্যে এই ঝোকটা অতি বেশি যাদের মধ্যে ম্যাচুরিটি জিনিষটা আসেনি। তাই তারা কাউকে যোগ্য সম্মান দিতে পারেনা। এর উপড়ের লেভেলেও অনেকেই আছেন যারা নিজেকে বড় করে দেখাতেই ব্যস্থ।   কেউ কষ্ট করে শিখতে চায়না। সবাই শর্টকার্ট পদ্ধতিতে ১ দিনে হ্যাকার হতে চায়। তারা যদি একবার বুঝতে পারত, এই ব্যাপারটা আসলে ছেলে খেলা না। এটা অনেক সাধনার ব্যাপার। দুয়েকটা টিউটোরিয়াল দেখে শিখার বিষয় না এটা। বা কোন একটি এপ্লিকেশন দেখেও শেখার বিষয় না। এটার  জন্য বেসিক গুলো শিখতেই হয়ত বছর পার হয়ে যাবে, সারাদিন পিসিতে বসে প্র্যাক্টিস করতে হবে!!!



 
মনে হয় না খুব বেশি কেউ আর ইন্টারেস্টেড হবে। কারন কেউ কষ্ট করতে রাজি না। সবাই ৩ দিনে হ্যাকার হতে চায় ! তাই তো আজ বাংলার  আকাশে বাতাসে হ্যাকার!!! কিছুদিন আগেও যেখানে হ্যাকারের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা আজ সেখানে রাস্তাঘাটে হ্যাকার পাওয়া যায়। নামে হ্যাকার আরকি !  অথচ যারা সেক্টরে কাজ করে, যারা অনেক বেশি জানেন, যারা প্রকৃত লীড তাদের কেউ চিনেনা পর্যন্ত!!!  শাহী মির্জা ভাইকে কয় জন চেনে? তারেক ভাই বা ফয়সাল ভাই কে কয়জনে চিনে বলতে পারেন? তাদের কোন শো অফ নাই বলে তারা চুপচাপ কাজ করে যাচ্ছেন। তারায় হলো সম্মানের পাত্র।



একটা কথা মনে রাখবেন যারা প্রকৃত হ্যাকার তারা কোন দিন শো অফ করে না, তারা কোন অহংকার দেখায় না, তারা বিনয়ী কারন তারা বিশালতা সম্পর্কে জানে। তারা যা জানে তাতে সন্তুষ্ট থাকতে পারেনা, আরো শিখতে চায়।  দুঃখজনক হলেও সত্যি সাইবার স্পেসে নতুন এসেছে তারা এখন শো অফ করে আর সবাই ভাবে তারা কি না কি! তাদের পা চাটা শুরু করে । আরে সেই সব ব্যাক্তি বর্গ ও ভাব নিতে থাকেন।  আর পর্দার আড়ালে আসল মানুষ গুলোয় কাজ করে যায় দিনের পর দিন। আরে সুবিধাবাদীরা অন্যদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে হিরো হয়ে যান। হয়ত এটাই নিয়ম!!!  পর্দার আড়ালের মানুষ গুলো এভাবেই নীরবে কাজ করে যায় আর অল্পবিদ্যাবিদদের দৌড় ঝাপ চলতেই থাকে!!!!

পরের পর্বঃ  ২য় পর্ব

6 comments:

  1. vaiya..amar sopno future a it niye lekha pora korar.. ar apni akdom e thik bolesen... hacking ajkal fashin er moto hoye jacche... 2/4 ta scammerder jonno.. but apnake valo laglo... ar ami aktu apnar kas theke help asa korsi.. jodi paren...

    ReplyDelete
  2. https://www.facebook.com/profile.php?id=100026024941099

    ReplyDelete
  3. Vi onek valo laglo kotha gulo

    ReplyDelete
  4. https://www.facebook.com/profile.php?id=100089595078311

    ReplyDelete
  5. Help my account hacked 😭

    https://www.facebook.com/profile.php?id=100071238376032&mibextid=ZbWKwL

    ReplyDelete