আবারো স্বাগতম সবাইকে। হ্যাকিং জগতের
খুঁটিনাটি নিয়ে লেখা ধারাবাহিক পর্বে J সবার কল্পনাতীত সাড়া পেয়ে কন্টিনিউ করার
অনুপ্রেরনা পেয়েছি। যাইহোক, আগের পর্বগুলোতে দেখেছি হ্যাকিং নিয়ে পর্যাপ্ত ধারনা
নেই বেশিরভাগ মানুষের । তারা এটাকে দেখে অনেকটা ইলিউশনের মতো। তাদের কাছে
স্বাভাবিকভাবেই এটা মজার জিনিষ। আবার সঠিক ধারনা না থাকায় তারা এটাকে ব্যক্তিগত
জীবন থেকে শুরু করে সব ব্যাপারে গুলিয়ে ফেলেন। তাদের ধারনা কম তাই তাদের
এক্সপেক্টেশন খুব বেশি । কিন্তু যারা একেবারেই নতুন সাইবার লাইফে ঢুকে তাদের কি
অবস্থা? কি মনে হয়? আমজনতার চেয়ে তাদের ধারনা বেশি???
মোটেও নয়! বরং অতি উৎসাহীরা বিপদ্গামী হয়।
তারা আমজনতার চেয়েও বাজে ধারনা রাখে। অতি এক্সাইটমেন্টে তারা ঘটিয়ে বসে
অনাকাঙ্ক্ষিত সব ঘটনা। আজকের পর্বটা তাদের উদ্দেশ্যেই।
শুরুটা হয় কোন হ্যাকিং গ্রুপের বা কারো
কোন ডিফেস পেজ দেখে। একেবারেই নতুন যারা ডিফেসিং করে তাদের অনেকেই নিজের গ্রুপে
লিঙ্ক দেওয়ার পাশাপাশি অন্য সব গ্রুপে গিয়ে পোষ্ট করে আসে, হ্যাকড বাই মি, অমুক ,
তমুক। আবার কিছু আগে দেখলাম কয়েকজন এতেও সন্তুষ্ট না, তারা এর ওর প্রোফাইলে গিয়ে ভাব
নিতে দেখা যায়, হ্যাকড বাই মি। ওকে তাদের ব্যাপারে পরে আসছি। কথা হচ্ছিল একেবারে
নতুন যারা হ্যাকিং জগতে ঢোকার জন্য মরিয়া তাদের নিয়ে। তো, ঐ গ্রুপ বা টাইম লাইনে এ
পোস্ট গুলো দেখার পর অনেকেই সিরিয়াস ইন্টারেস্টেড হয়ে যায়। আর ভাবে আমিও হ্যাকার
হব। শুরু হয় দৌড়ঝাপ!!!
রিলেটেড কাউকে পাওয়া গেলে রিকুয়েস্ট করা
শুরু করে। অভিজ্ঞতা বলে এদের বয়স খুবই কম। যারা কোন কিছু বিচার বিবেচনার ক্ষমতা
রাখেনা। যারা আবেগ দিয়ে চালিত হয়, বিবেক দিয়ে নয়। তারা হ্যাকিং শিখবে শিখবে করে একেবারে
অধৈর্য্য হয়ে যায়। আর তারায় সব চেয়ে বিপদ
গামী!!! কারন তাদের জন্যই একদল প্রতারক
তাদের সীমাহীন এই এক্সাইটমেন্টকে কাজে লাগিয়ে তাদের পন্য বানিয়ে ফেলে!!! কিছু দিন
আগেই এমন ঘটনা ঘটেছে। যাদের হ্যাকিং শিখানোর নামে প্রতারক চক্রটি নিজেদের আক্রোশ
মিটাতে গিয়ে ঐসব আগ্রহীদের শুধু নিজেদের গোলামই বানিয়ে রেখেছে! আর ঐসব অতি আগ্রহী
ব্যাক্তিরা তখন পড়ে থাকে রঙ্গীন চশমা। তাই তারা সহজ সরল মনে সব করে যায়। যত নীচে
নামতে হয় তারা নামতে রাজী! যাই করতে হোক, তারা করতে রাজী! তাদের বিবেক বাঁধা পড়ে
যায় সেই সীমাহীন আগ্রহের দিকে। আর এটাকেই মোক্ষম সুযোগ ভেবে এই ধরনের অতি
উৎসাহীদের নিয়ে তৈরি হয় প্রতারক সুবিধাবাদীদের ল্যামিং প্ল্যান। কিন্তু যারা অতি উৎসাহে এসব করে তাদের কোন একদিন গিয়ে ভুল ভাঙ্গে !
তারা বুঝতে পারে এতদিন ঘরের খেয়ে পরে মোষ তাড়াতে গেছে! কিন্তু তখন তাদের কিছু করার
থাকেনা। ততদিনে তারা বাঁধা পড়ে যায় প্রতারকদের দেওয়া এভিডেন্স গুলোতে। তারা ভয়
পায়, আর প্রতারক চক্রও এটাকে অস্ত্র বানায়!
একটা কথা বলে রাখা ভাল, বড় বড় হ্যাকিং
গুলো কখনোই ১০০% কোয়ালিটি ফুলফিল না করে কাউকে তাদের মেম্বার বানায় না। এজন্য নতুন
একজনের লাগতে পারে মিনিমাম ১ বছর বা তারো
বেশি! তাদের প্রশিক্ষন দেওয়া হয়, তাদের
কেয়ার নেওয়া হয়, সেভাবে তাদের তৈরি করা হয় যাতে ভবিষ্যতে সেই টীমের দক্ষ পরিচালনা
এবং মিনিমাম কোয়ালিটি ধরে রাখতে পারে। আর তারা মেম্বার নেয় বছরে ১ বার বা ২ বছরে
একবার। যদি গ্রুপ গুলো সবাইকে এভাবেই এড করা শুরু করে তাহলে তা আর হ্যাকিং গ্রুপ
থাকে না, মাছের বাজার হয়ে যায়! আর খুব সহজে
কেউ যদি ঢুকেও যায়, তারা এর মর্ম বুঝতে পারেনা। এরকম
টীম আছে হাতে গোনায়! প্রকৃত হ্যাকিং টীমে
একজন আনকোরা! একেবারে নতুন ! তাদের কখনোই আশা করা যায় না। সুতরাং যারা বিনা
পারিশ্রমিকে কোথাও ঢুকে যেতে পারেন, তাদের ভেবে দেখার অবকাশ আছে তারা প্রতারিত
হচ্ছে কিনা? কেউ তাদের কোন বাজে উদ্দেশ্য নিয়ে কাজে লাগাচ্ছে কিনা? J এসব নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাববার সময় এসেছে!!!
মজার ব্যাপার হলো অতি উৎসাহীদের অত
ধৈর্য্য নেই অপেক্ষা করার। তাই অনেকেই তৈরি করেন পিং হ্যাট, ব্লু হ্যাট, *** হ্যাট!!! যেখানে সেই ব্যাক্তিই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী!!! এডমিন! সো,
ভাব নিয়ে তারা পোস্ট দেয় ক্রু লাগবে !! কিন্তু নিজেই জানেনা হ্যাকিং কি? কেন গ্রুপের উৎপত্তি? লক্ষ্য কি? কোন ভিশন আছে
কিনা? কোয়ালিটি আছে কিনা? মনে রাখা উচিত
একটা গ্রুপে সব ধরনের দক্ষ মানুষ দরকার! যোগ্য মানুষ দরকার। না হয় গ্রুপ শুধু
নামেই! ২ দিন পর বানের জ্বলে ভেশে যাবে। কিছুদিন আগে একটা লিস্ট দেখেছিলাম
বাংলাদেশের হ্যাকিং গ্রুপের যেখানে ৮০+ বা তারো বেশি গ্রুপের নাম ছিল। এসব গ্রুপের
উত্থান সম্পর্কে আশা করি ধারনা পেয়েছেন। আর নতুনদের স্বপ্ন ভঙ্গের নামও হয় এসব
তথাকথিত গ্রুপ গুলোর কাছেই। তাই এটা মাথায় রাখা উচিত, কিছু না জেনে নয়, বরং নিজেকে
যোগ্য করে দরকার হলে ৩ বছর পর প্রতিষ্ঠিত কোন গ্রুপে ঢোকার চেষ্টা করা। কারো কথার
গোলাম, পন্য হতে চাইলে কিছু না জেনেও খুব সহজে ঢুকতে পারেন J নাউ,
চয়েস ইজ ইউরস!!! আরো অনেক কথা বলার ছিল,
লেখা বড় হয়ে গেছে, পরের পর্বেও এই টপিক এর উপড় কথা হবে। বলছিনা আমি কোন পীর সাহেব J আমার কথা শুনতে হবে। শুধু বলব নিজের বিবেক দিয়ে
চলুন। আবেগ দিয়ে নয়।