অনন্ত জলিল!!! বাংলাদেশে খুব পরিচিত একটি নাম। ফেসবুকের কল্যানে তার পরিচিতি ব্যাপক, কারন ফেসবুকে জলিল কে ট্রল করেনি এমন মানুষ পাওয়া যাবেনা। বরং অনন্ত জলিল কে নিয়ে ট্রল করাটায় সবার ফ্যাশন হয়ে গেছে, যেন ট্রল না করাটা সেকেলে, আর জলিল কে নিয়ে ট্রল করাটা স্মার্টনেসের বহি:প্রকাশ!!! তাই কেউ জেনে না জেনে দিন রাত এই মানুষটিকে নিয়ে আমরা কত হাসি টাট্টা করছি। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হলো, এই মানুষটি সব কিছু জেনে শুনেও এসবে কান দেয়নি তার নেচার অনুযায়ী সে কাজ করে গেছে!!! কে কি বলল না বলল তাতে কান না দিয়ে কাজ করে গেছে, তাতে উপকৃত হয়েছে দেশ, দেশের মানুষ!!!
দেশ ও দশকে কি দিচ্ছে অনন্ত জলিল:
বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিতে রীতিমত ঝড় তুলেছেন তিনি। চিরাচরিত গাঞ্জাটি মার্কা, সল্প বাজেটের বাংলা (পর্ন) ছবি, চিরাচরিত সেই বড় লোক গরীবের ভালবাসার কাহিনী, ফোর্থ ক্লাস প্রিন্ট, কে ছাপিয়ে ভাল প্রিন্ট এবং থ্রি ডি মুভির মত ব্যয়বহুল এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রায় অসম্ভব চিন্তা করেছেন তিনি। থ্রি ডি মুভির চিন্তা তার মাথা থেকেই বের হয়েছে বাংলাদেশের নোংরা চলচিত্রকে আবার আলোয় ফিরাতে অনন্তের ভুমিকা সত্যি প্রশংসনীয়!!! নতুন পথ দেখিয়েছে দিক ভ্রান্ত বাংলাদেশের চলচিত্রকে!!! আশা করা যায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মুভি গুলো চিরাচরিত সেই গাঞ্জাটি মুভির পরিবর্তে হলিউড এর মত একশন, গ্রাফিক্স, থ্রিডি মুভি বের করতে পারবে। নিজের
খরচে এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম চালান
মানুষটা । সীমাহীন মমতায় প্রবীন
অভিনেতা আনোয়ার হোসেনের
পাশে দাড়ান ।
সিনেমা জগতের পাশাপাশি তার আছে আরেকটি পরিচয়, অনন্ত একজন গার্মেন্টস ব্যাবসায়ী। জেনে অবাক হবেন দেশে যেখানে প্রায় সব গার্মেন্টসে শ্রমিক ধর্মঘট হয়, আন্দোলন হয়, জালাও পোরাও হয়, সেখানে অনন্ত জলিলের গার্মেন্টস পাহাড়া দেয় খোদ সেই গার্মেন্টসের শ্রমিকরাই!!! কারন একটিই অনন্ত আসলেই একজন বড় মাপের মানুষ!!! সুখে দু:খে সব সময় পাশে দাড়িয়েছে, টাকা দিয়ে সাহায্য করেছে, বেতন বোনাস দিয়েছে।
দেশের রুপালী জগতের অনেকের খারাপ সময়ে পাশে থেকে, অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন যেখানে পুরো একটি ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রি আছে, সেখানে তারা নির্বিকার! কত বড় বড় অভিনেতা আছে যারা অসুস্থতার সময়, জীবনে খারাপ সময়ে তাদের সহকর্মীর পাশে দাড়ায় নি!!! এই একটি মানুষই সব সময় পাশে দাড়িয়েছে।
সম্প্রতি তিনি পাশে দাড়িয়েছেন জটিল রোগে আক্রান্ত ১২ বছরের শিশু সুজনের পাশে। তার পরিবারের পক্ষে চিকিৎসার খরচ বহন করা অসম্ভব তাই পাশে দাড়ালেন অনন্ত আর নিজ খরচে ভারতে পাঠালেন দরিদ্র ঘরের এই শিশুকে। এছাড়া ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত আহনাফের ও পাশে দাড়ান তিনি, এরকম আরো কত মহত্তের ঘটনা আছে যা সব বর্ননা করা সম্ভব না। শুধু এটুকুই বলব অনন্ত এক মহান হৃদয়ের অধিকারি!!! মহৎ মানুষ। রুপালী জগতের নায়ক নয়, এক জন সত্যি কারের নায়ক এই অনন্ত জলিল!!!!
পরিশেষে: আমরা গুনীদের সম্মান করতে পারিনা, মুল্য দিতে পারিনা বলেই আমাদের দেশে মেধাবীরা এদেশে টিকতে পারেনা। দেশের মেধা পাচার হয় অন্য দেশে। কবে আমরা মেধাবী, ভাল মানুষ, সৎ মানুষ কে মুল্যায়ন করতে শিখব? মুলত অনন্ত কে সবাই হাসে তার ভাষা গত কিছু সমস্যার কারনে, একবার চিন্তা করুন, বুকে হাত দিয়ে ভাবুন আপনি ভুলের উর্ধে কিনা? বাংলা ১২ মাসের নাম জিজ্ঞাসা করলে হা হয়ে থাকবেন এরকম মানুষের অভাব নেই, তাহলে একটি মানুষকে নিয়ে এত হাসাহাসি কেন? আমরা কি পারিনা একজন মহৎ হৃদয়ের অধিকারি, মানুষের সেবক, পরোপকারী, দরিদ্র মানুষের বিপদের সাহায্যকারী, এই মানুষ কে তার যোগ্য সম্মান করতে? আমি একজন অনন্ত জলিল কে নিয়ে কথা বলছিনা, আমি বলছি এক মহান মানুষ, এক মহান হৃদয়ের মানুষ অনন্তের কথা, যারর কাজ দেখলে শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে আসে!!! স্যালুট মি. অনন্ত জলিল
অনন্ত জলিলের প্রতি: মি. অনন্ত, প্রথমেই ব্যক্তি গত ভাবে আমি ক্ষমা চাচ্চি, তোমার মত মানুষকে নিয়ে আমরা ট্রল করি, হাসা হাসি করি, ফেসবুকে কমেন্টের হাসির খোরাক করি। যদিও তোমার মত আমরা হতে পারিনা। কারো বিপদে পাশে দাড়াতে পারিনা, অর্থের পিছনে ছুটি কিন্তু সেই অর্থ ভাল কাজে, কারো উপকারে লাগায় না। অনন্ত, তুমি সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছ, যার যা ইচ্ছা হয় বলুক, তুমি এগিয়ে যাও। বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিতে, বাংলাদেশের পোষাক শিল্পে একজন হিরো, এখন দেশ সেরা সফল ব্যাবসায়ী হিসাবে তোমাকে বাংলাদেশের আরো দরকার। তুমি প্রমান করে দাও, "অসম্ভবকে সম্ভব করা অনন্তের কাজ " শুধু কথায় না কাজে!!!! Just Keep IT Up!!!
0 comments:
Post a Comment