Sunday, March 23, 2014

সিস্টেম ক্রাশ



সিম্পটেনিয়ার প্রধান শহর এড়িয়া-৯৩ কে ঘিরে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে চারিদিকে তুমুল সতর্কতা! পুরো শহরে নিয়োগ করা হয়েছে রোবট যোদ্ধা অপারেশন আর্থ- হল রুমে জড় হল সবাই, রুমে পিন-পতন নিরবতা!  সব রোবট  সতর্ক! সবার বুকে লাল বাতির এলার্ট এলার্ম বাজছে! হেড অফ ডিফেন্স মেকানিজম রিসার্চ ডিপার্টমেন্টের রিপোর্টের প্রতিক্রিয়ায় পুরো শহর থমথমে! যে রিপোর্টে বলা হয়েছে, খুব শীঘ্রই  সি¤পটেনিয়া গ্রহে হামলা করতে আসছে পৃথিবীর মানুষ!!!!  এইবার নিরবতা  ভেঙ্গে  সিম্পটেনিয়া গ্রহের প্রধান রোবট এলেক্স  চেঁচিয়ে উঠল উত্তেজিত  স্বরে!

না! আমাদের এত দিনের এক্সপেরিমেন্ট এভাবে ব্যর্থ হতে পারে না! তোমরা করটা কি??? এলেক্সের এর  মুখ লাল হয়ে উঠল! বাকি রোবট মাথা নিচু করে আছে!

কিন্তু আমাদের চেয়ে মানুষের টেকনোলজী ছিল অনেক উচু মানের! তাদের কৌশলও ছিল অসাধারণ! বলল সামনের সারির একজন রোবট! – তাহলে তোমাদের রাখা হয়েছে কেন? উত্তেজিত স্বরে বলল এলেক্স!  

 -  পৃথিবী আমরা ধংস্ব করে দিয়েছিলাম! মানুষকে আমরা আমাদের গবেষনার জন্য বন্দিকরেছিলাম! তাদের মাথার ব্রেন নিয়ে আমরা পরীক্ষা করে যাচ্ছিলাম! কিন্তু একি শুনছি!!!! এলেক্সের কপালে একটু একটু ঘামতে লাগল, তার কপালে সেট করা ডিটেক্টর রেড লাইট জ্বলছে!  মাথায় রাজ্যের টেনশন আর উত্তেজনা!  প্রচণ্ড রেগে আছেন এলেক্স!



মধ্য সারির একজন গ্রিন রোবট  থট এগিয়ে আসল! থট  ষষ্ট  প্রজন্মের  অটো মেমোরাইজড রোবট!
স্যার !
রোবট থটের কথায় সম্ভিত ফিরে পেলেন  এলেক্স
- স্যার  একটা দুঃসংবাদ আছে !ভার মুখ করে বলল রোবট টা 

আর কি দুঃসংবাদ হতে পারে তাঁর জন্য !
চিন্তা করলেন এলেক্স  তাদের সব গবেষণায় যে  ব্যর্থ পৃথিবীর সব মানুষকে বন্দি করা হয়েছিল! তাদের ব্রেন নিয়ে ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে তৈরি করা হয়েছে মানবিক গুন-¤পন্ন রোবট পৃথিবী ছিল তাদের নিয়ন্ত্রিত একটি কারখানা! যে খানে কোন মানুষের অস্তিত্ব আশা করা যায় না! পৃথিবীর সব প্রযুক্তি ছিল তাদের হাতের মুঠোয়! কিন্তু!!! আজ কি হচ্ছে এসব?

স্যার আপনি কি চিন্তিত? বলল রোবটটি
-  না, বলো, কি জানি বলছিলে?
-   স্যার একটা দুঃসংবাদ আছে! কথার পুনরাবৃত্তি করলেন রোবট থট!

হাত দিয়ে ইশারা করলেন এলেক্স! অনুমতি পেয়ে বলা শুরু করল থট!

- স্যার! কিছুক্ষন আগে আমাদের সাথে পৃথিবীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে! খুব সম্ভবত পৃথিবীতে আমাদের কন্ট্রোল ইউনিট কোন ঝামেলা হয়েছে! রাডার এও কিছু ধরতে পারা যাচ্ছে না! স্যাটেলাইটে কিছু দেখা যাচ্ছে না! এরর দেখতে পাচ্ছি! আমাদের মহাকাশ যান গুলোও এখন নিয়ন্ত্রনের বাইরে! পৃথিবীতে আমাদের ল্যাব এসিস্ট্যান্ট রোবট সি¤িপ এর সাথেও কোন রকম যোগাযোগ করতে পারছি না! আমাদের গবেষণাগার এর সব তথ্যও নষ্ট হয়ে গেছে!!! সিস্টেম ক্রাশ হয়েছে!   থামল রোবটটি

-  আমি দুঃখিত অনেক গুলো দুঃসংবাদ আমাকে এক সাথে দিতে হল!

এলেক্সের চোখে মুখে হতাশা! তার চোখের লাল লাইট জ্বলে উঠল! বুঝাই যাচ্ছে এলেক্স খুব রাগান্বিত এবং চিন্তিত!

এবার চারি দিকে ম্রিদু গুঞ্জন! কিভাবে সম্ভব? অসম্ভব! চলল ফিসফাস! 

অসম্ভব! অসম্ভব!  অসম্ভব!

এবার চেঁচিয়ে উঠল সি¤পটেনিয়া গ্রহের ল্যাব কন্ট্রোলার রোবট মিকি-মাইস!  - টা কিভাবে সম্ভব হল? পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল না! যারা জীবিত, তারা বন্দী এবং আমরা তাদের ব্রেন  নিয়ে গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছি! তাহলে কোন রকম পুর্বাভাস ছাড়াই মানুষ কিভাবে জম্ম নিল? কিভাবে তারা সংঘঠিত হল? কিভাবে তারা আমাদের চোখের আড়ালে আমাদের প্রযুক্তির চাইতেও বেশী কিছু অর্জন করল?

আজ পৃথিবী সহ আরও ১০-১২ টি গ্রহ আমাদের  করুণায় চলে!!! আমরাই ছিলাম প্রযুক্তিতে সেরা! যে কারনে ৪০২৯ সালে আমরা পৃথিবীকে মাত্র ঘণ্টায় দখল করেছিলাম! 


-  কিন্তু মানুষের  জম্মের বিষয়টি আমাদের হাতে ছিল না!  বলে উঠল দ্বিতীয় সারির একটি রোবট পল!
তার গায়ে মরিচা পড়া! তার গায়ে ইলেকট্রনিক চিপ গুলোও বের হয়ে আসছে!  অনেক আগের রোবট! একেবারে প্রথম প্রজম্মের! অনেকটায় অবহেলিত রোবটটি! কিন্তু বুদ্ধিজীবী রোবট  হিসাবে তার সুনাম আছে! পল আবার বলা শুরু করল


 - আমরা মানুষের জীবন কে নিয়ন্ত্রন করে পারিনা! কারন আমরা কাউকে জীবন দিতে পারিনা! এবং তা রোধ করতে পারি না! মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে কোন প্রযুক্তির সাথে তুলনা করা যাবে না! তাদের ব্রেইনের সেল গুলোর রহস্য আমরা এখনও বের করতে পারিনি! আর মানুষের জীবনের পরিধি ছোট, তাই তাদের এত সময় নেই! আমরা একটি এক্সপেরিমেন্ট করতে বছরের পর বছর পার করি, কারন
আমাদের জীবনের কোন সীমা নেই! সময়ের অভাব নেই! কিন্তু মানুষের তা আছে, তাই তারা তাদের সমস্যা খুব দ্রুত সারিয়ে উঠতে মরিয়া হয়ে উঠে! আর আমরা তা করি অনেক দেরিতে এইজন্য মানুষের  কর্ম ক্ষমতাও একটু বেশি, আমি বলতে চাইছি তাদের চিন্তা শক্তি আসলেই অনেক বেশি

এলেক্স উত্তেজিত স্বরে বলে উঠল! ঠিক আছে বুঝলাম তাদের ব্রেইন এর পরীক্ষায় এখনো আমরা এখনো সফল হইনি! কিন্তু তারা আমাদের চেয়েও প্রযুক্তিতে এগিয়ে গেল কিভাবে? কিভাবেই বা আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা আজ আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠার সাহস পেল???
 হাউ?????  হাউ?????  হাউ?????  টেবিল চাপরে চিৎকার করছে এলেক্স!!!  প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত!!!

- কারন তারা সংগঠিত  হয়েছিল আমাদের আড়ালে! বলল সামনের সারির মেয়েলী প্রোগ্রামার রোবট মেরি!
-       কিভাবে?
-   তারা আমাদের আড়ালেই সব করছে! কারন তারা আমাদের সমগ্র সিস্টেম হ্যাক করেছিল !!!!  যা এতদিন আমরা কেউ বুঝতে পারিনি!

-   তাহলে এতদিন আমাদের  লাইভ ভিডিও কন্ট্রলারে যা দেখেছি? ওই গুলো      কি মিথ্যা??? রাগে গিজ গিজ করছে এলেক্স!!!

-  জি স্যার, ঠিকই ধরেছেন! আমরা এতদিন যা  দেখে আসছিলাম তা আসলে একটি ফাঁদ! মানুষ তাদের জন্য রোবট বানিয়েছে! ঠিক আমাদের ল্যাব রোবট সি¤িপ এর মতই! সব কিছু হবহু কপি করা  হয়েছে! যার কারনে এতদিন বুঝা যায়নি! আমরা আসলে একটা  র্ট্যাপের শিকার!!!

-  তার মানে? কি বলতে চাও তুমি???
-  স্যার, তার মানে হল আমরা এতদিন যা কন্ট্রোল করতাম! যা দেখতাম সবই আসলে ফেইক! মানুষরা আসলে এতদিন আমাদের নিয়ে খেলা করছে! তারা আমাদের সিস্টেম হ্যাক করে আমাদের বোকা বানিয়েছে! আর তারা প্রতিনিয়ত আমাদের কেই কন্ট্রোল করে যাচ্ছে! তারাই নিয়ন্ত্রন করছে আমাদের প্রোগ্রাম!

এলেক্স বসে পড়ল!





তার মানে, আমরা মানুষদের নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করিনি! তাহলে কি এত দিন আমরাই মানুষের এক্সপেরিমেন্টের অংশ ছিলাম????? আমাদের কে বানাল তাহলে?   তাহলে আমরা কি মানুষের হাতে বানানো একটি যন্ত্র মাত্র? এই বার নিষিদ্ধ প্রশ্নটি করে বসল একটি রোবট!
- ঠিক তাই জবাব দিল মেরি!
এলেক্স কে এখন আর ভয় পাচ্ছে না কেউ! কারণ সবার জানা হয়ে গেছে তাদের পরিণতি ¤পর্কে! 
হঠাৎ বাইরে চিৎকার চেঁচামেচি শুনা গেল! সাইরেন শোনা যাচ্ছে! সবাই চিৎকার করছে!  তার মানে মানুষের মহাকাশ যান ইতিমধ্যে ঢুকে পড়েছে সি¤পটেনিয়া গ্রহে!!!  এলেক্স নির্বিকার হয়ে বসে আছে!
হয়ত একটু পরই এলেক্স শেষ হয়ে যাবে! সিম্পটেনিয়া হবে দ্বিতীয় পৃথিবী! এখানের সব রোবট হবে মানুষের দাস!!!  আসলে যতই প্রযুক্তির  উন্নতি হোক না কেন, মানুষের মস্তিকের এই সীমাহীন ক্ষমতা সবার অগোচরই থেকে গেছে! হয়ত এই রহস্য সয়ং বিধাতা ছাড়া আর কেউ আবিষ্কার করতেপারবেনা! তাই মানুষ তার এই ক্ষমতা দিয়ে ধংসস্তুপ থেকে আবার উঠে দাঁড়ায় আবার যুদ্ধ
করে! মানুষের এই ব্রেনের কাছেই আজ হেরে গেল এতদিনের পরাক্রমশালী  রোবট সাম্রায্য! এরিয়া-৯৩ এর অপারেশন আর্থ  হল  ভবনের ছাঁদে ভীষণ শব্দে কেঁপে উঠল!!! মানুষের মহাকাশ
যান থেকে ফায়ারিং ততক্ষণে শুরু হয়ে গেছে!!! .........................

5 comments:

  1. ভাল লাগসে ভাইয়া।।waiting for next part!!!

    ReplyDelete
  2. ভালো লাগছে একেবারে সেইরকম :D

    ReplyDelete
  3. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  4. কঠিন হইসে ভাই. That very nice and respectful.

    ReplyDelete